রাতের আঁধারে বিক্রি হচ্ছে পদ্মার বালু-মাটি

রাজশাহীর বাঘায় পদ্মা নদীর পাড় স্লোপিংয়ের নামে রাতের আঁধারে দেদারসে বালু ও মাটি তুলে বিক্রি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে প্রশাসনকে জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না পদ্মার পাড়ে বসবাসকারীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার মনিগ্রাম ইউনিয়নের মীরগঞ্জ চায়পাড়া ও বাজার ঘাট পদ্মা নদীর বাঁধ নির্মাণ এলাকায় কতিপয় প্রভাবশালী মেশিন দিয়ে ভরাট বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছেন। এই বালু উত্তোলনের প্রতিবাদ করতে গিয়ে ইতিমধ্যে তোপের মুখে পড়তে হয়েছে স্থানীয়দের।

নদীর তীর রক্ষার জন্য ১০টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ব্লক তৈরির পাশাপাশি নদীর পাড় স্লোপিংয়ের কাজ করছেন। যতটুকু মাটি তোলার দরকার, সেটি না করে কতিপয় প্রভাবশালী প্রতিদিন রাতে শত শত ট্রাক বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছেন। ফলে ব্লক দিলেও হুমকিতে থাকবে এই বাঁধ এমন অভিযোগ স্থানীয়দের।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চারঘাটের ইউসুপপুর থেকে বাঘার গোকুলপুর ঘাট পর্যন্ত নদীর তীর রক্ষায় ৭২৪ কোটি টাকায় ১২ কিলোমিটার বাঁধ এবং চকরাজাপুর এলাকায় নদী ড্রেজিং করার জন্য আরও সাড়ে তিন কোটি টাকা একনেকে পাশ হয়ে বরাদ্দ অনুমোদন হয়। এগুলোর কাজ করছেন ১০টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

এ বিষয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত খন্দকার কন্সস্ট্রাকশনের ম্যানেজার নুরুনবী বলেন, নদীর পাড় থেকে ২৫ মিটার স্লোপ এবং ৩৫ মিটার ডামপিং হবে। ডামপিং থেকে কিছু বালু এনে পাড় বাঁধার কাজ করা হচ্ছে। এই সুযোগে ভরাট বালু কিছু মানুষ মেশিন দিয়ে রাতের আঁধারে উত্তোলন করে বিক্রি করছেন। এ বিষয়ে স্থানীয় মনিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, শুনেছি কে বা কারা রাতের আঁধারে ভরাট বালু উত্তোলন করছেন। বাঘা উপজেলা নির্বাহী অফিসার পাপিয়া সুলতানা বলেন, এ বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। তারপরও খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে গত এক সপ্তাহের বেশী সময় ধরে মাটি ও বালু উত্তোলন চলছেই। এতে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে সরকারের কয়েক কোটি টাকা ব্যায়ে নদীর বাধ নির্মান প্রকল্পের উন্নয়ন কাজ।

সরজমিন ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, এক দিকে চলছে নদীর বাধ নির্মাণের কাজ, অন্য দিকে ওই এলাকার দুই গ্রুপে চলছে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও নদীর পাড় কেটে মাটি বিক্রি। মীরগঞ্জ বাজারের পশ্চিমে নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করছেন সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুর রহমান ও মিন্টু আলীর নেতৃত্বে এ্কটি গ্রুপ। অন্য দিকে মীরগঞ্জ বাজারের পুর্বে নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালু ও নদীর পাড় কেটে মাটি বিক্রি করছেন আওয়ামীলীগ নেতা হিসেবে পরিচিত ফজলুল হক, ভানুকর গ্রামের রেন্টু আলীর নেতৃত্বে অপর একটি গ্রুপ।

অভিযোগ রয়েছে নদীর বাধ নির্মাণ প্রকল্পের কাজে জড়িত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কিছু লোকজনের যৌথ তদারকিকে চলছে এমন অবৈধ কর্মযজ্ঞ। অনেকটা বাধাহিন ভাবে চলছে এমন অবৈধ কর্মযজ্ঞ। 

চাঁপাইবার্তা/জেকে।।