জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ: প্রজ্ঞাপন জারি

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর নিষিদ্ধ হওয়া জামায়াতে ইসলামী অর্ধশতক পর আবারও নিষিদ্ধ হয়েছে। একই সঙ্গে নিষিদ্ধ হয়েছে অঙ্গ সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবির।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করা এই দলকে ১৯৭২ সালে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মের অপব্যবহারের’ কারণে। এবার দলটিকে নিষিদ্ধ করা হয় জন নিরাপত্তার জন্য হুমকি বিবেচনা করে।

গত ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা বিভিন্ন সময়ে একাত্তরের ভূমিকার জন্য জামায়াত নিষিদ্ধের পক্ষে মত দিয়েছেন। কিন্তু দলটিকে নিষিদ্ধ করার দাবি অপূর্ণই থেকে গেছে এতদিন। এবার তা পূরণ হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ এই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। সন্ত্রাস বিরোধী আইনের ২০০৯ এর ১৮/১ ধারার ক্ষমতা বলে বাংলাদেশ জামাতে ইসলামের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এতে সই করেছেন মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব জাহাংগীর আলম।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করার একটা আইনি প্রক্রিয়া আছে। সেই আইনের প্রক্রিয়া আমরা গত পরশু (মঙ্গলবার) শুরু করে দিয়েছিলাম। এটার যে গেজেট নোটিফিকেশন হয় এটারও কিন্তু কিছু আইনি বাধ্যবাধকতা পূরণ করতে হয়।

সেই কারণে গতকাল (বুধবার) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইনি বাধ্যবাধকতাগুলো পূরণ করে আজকে সকালে আমার মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ডিভিশনে পাঠিয়েছে। লেজিসলেটিভ বিভাগে পাঠানোর পর আমরা এটিকে ভেটিং করে এটাকে আবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাঠিয়ে দিয়েছি।

তিনি বলেন, সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ১৮/১ ধারায় জামায়াত-শিবির ও অন্যান্য যে অঙ্গ সংগঠন নিষিদ্ধ, এটা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের যে দ্বিতীয় তফসিল আছে, সেখানে এগুলো তালিকাভুক্ত হবে।

উচ্চ আদালতের রায়ের প্রেক্ষিতে ২০১৩ সালে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। দলটির ছাত্র সংগঠনের নাম ইসলামী ছাত্রশিবির। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের ফাঁসির রায়ও কার্যকর করা হয়েছে।

জামায়াতের পক্ষ থেকে নিবন্ধন বাতিল করে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়েছিল। তবে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর জামায়াতের পক্ষের আপিল খারিজ করে দিয়েছেন। ফলে দলটির নিবন্ধন বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল রয়েছে।

সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে দেশব্যাপী ব্যাপক তাণ্ডব চালানো হয়। এসব হামলার পেছনে জামায়াত-শিবিরের সংশ্লিষ্টতা আছে বলে দাবি করা হয় সরকারের পক্ষ থেকে।

এমন পরিস্থিতিতে গত সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে বৈঠকে বসে ১৪ দল। সেখানে জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় ক্ষমতাসীন দলটির নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোট।

চাঁপাইবার্তা/জেকে।।